কোটি টাকায় তৈরি বায়ো বাবল ভেঙেও ছাড় পেয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান ও তার ক্লাব মোহামেডান। শেষ পর্যন্ত ক্ষমার পথেই হাঁটলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যদিও ঢাকা লীগ শুরুর আগে বিসিবি ও সিসিডিএম কর্তাদের হুংকার ছিল কোনভাবে বায়ো বাবল বা জৈব সুরক্ষা বলয় ভাঙলে কেউ ছাড় পাবে না।
গতকাল এক ভিডিও বার্তায় ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ক্লাব, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলেই থাকবে শাস্তির আওয়াতে। করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত ক্রিকেটকে পথ দেখিয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয় প্রক্রিয়া। এনসিএলের মতো ঢাকা লীগ যেন স্থগিত না হয়ে যায় সেই জন্য এবারই প্রথম বলয় ভাঙলে শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়।
কিন্তু নিজের অনুশীলনে বহিরাগতদের এনে সেই নিয়ম ভেঙেছেন সাকিব। শুধু তাই নয়, এবারই প্রথম ঢাকা লীগের ১২ দলের ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের পাঁচ তারকা হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন ঘটনার পর বিসিবির বেশ কয়েকজন সিনিয়র পরিচালক জানান কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু গতকাল এক ভিডিও বার্তায় কাজী ইনাম আহমেদ বলেন, দুঃখ প্রকাশ করায় আপাতত মোহামেডান ক্লাব ও ক্রিকেটারদের সতর্ক করে নোটিশ পাঠাবেন তারা। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
তবে এমন সিদ্ধান্তে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে যারা বিসিবির বায়ো বাবল সিকিউরিটির দায়িত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো না। তারা অবহেলা না করলে এমনটাতো হতেই পারতো না! সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বায়ো বাবল ভাঙলে বিসিবির কঠোর অবস্থানের কথা স্পষ্ট হয়নি। তিনি বলেন, ‘গত ৮ই জুন বিসিবি এবং সিসিডিএম থেকে একটি হেয়ারিং হোল্ড করেছি।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের প্র্যাকটিসের সময় একটি বায়ো বাবল ভঙ্গ হয় যেটা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিসিবি এবং সিসিডিএমের পক্ষ থেকে টুর্নামেন্টটির ভবিষ্যত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই। কালকের এই মিটিং ও হেয়ারিংয়ে বিসিবির ডিরেক্টর এবং টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ছিলেন, বিসিবির সিইও, মেম্বার সেক্রেটারি অব সিসিডিএম, ক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে মোহামেডান ক্লাবের ম্যানেজার ছিলেন এবং সাকিব আল হাসান ছিলেন।
দুর্ভাগ্যবশত যে বায়ো বাবল ভঙ্গ হয় সে ব্যাপারে তারা সতর্ক। আমরা বায়ো বাবল রক্ষার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।এবং তারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। যাতে টুর্নামেন্টটি সুন্দরভাবে হয় সে কারণে আমরা সকল ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা আশা করছি টুর্নামেন্টটি সফলভাবে চালিয়ে যেতে পারবো।’যাতে সামনে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য মোহামেডান কর্তৃপক্ষ এবং প্লেয়ারদের একটা নোটিশ পাঠাবো।
কেন সিসিডিএম এত হুংকারের পর নীরব! কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে সামনেই বিসিবির নির্বাচন। তাই এখন ক্লাবগুলোর সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াতে চান না কর্তা ব্যক্তিরা। আর সাকিব আল হাসানকে শাস্তি দিলে ফের বিসিবি জড়িয়ে যেত বিতর্কে। বিসিবির অন্যতম সিনিয়র পরিচালক মাহবুবুল আনাম রয়েছেন মোহামেডান ক্লাবের দায়িত্বশীল পদে। কোনো শাস্তি হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে লীগ।
আর সেটি হলে বিসিবির নির্বাচনি প্রক্রিয়া ব্যাহত হতো। কারণ, এই লীগের সুপার লীগের ছয় ক্লাবের হাতে ১২টি ও আসরের বাকি ৬ দলের হাতে ৬টি ভোট থাকবে। আর এই কারণেই কোনো ঝামেলা ছাড়া লীগ শেষ করতেই আপাতত কোনো শাস্তির পথে হাঁটেনি বিসিবি। এ বিষয়ে সিসিডিএমের সদস্য সচিব আলী হোসেন বলেন, ‘আমাদের বিভাগের (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দিয়েছেন যারা বায়ো বাবল ভেঙেছে তাদের সতর্ক করে দেয়া হবে।
আর আমরা সবাইতো চাই লীগটা ভালোভাবে শেষ হোক। তবে এটাও সত্যি যে বায়ো বাবল যে কোনোভাবে কেউ যেন না ভাঙতে পারে সেই বিষয়ে আমরা কঠোর আছি এবং থাকবো। যেন তারা সামনে এমন কাজ না করে।
গত মঙ্গলবার সাকিব আল হাসান, মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ও সিনিয়র কর্মকর্তারা বিসিবি’র ভার্চুয়াল হেয়ারিংয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এরপই বিসিবিতে সিদ্ধান্ত হয় আপাতত নমনীয় হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any doubts,Please let me know.